স্থানঃ নানুর, বীরভূম
কালঃ বসন্ত
সময় কালঃ বর্তমান
চন্ডীদাস ডাক দিলেন "রামীণী, এই অবেলায়, হাওয়াবদলের সময় নদীর ঘাটে বসে কাপড় কাচলে যে ঠান্ডা লেগে যাবে তোমার । দিনের আলো নিবে এল যে....
" চলো প্রিয়তমা রামীণী, আর যে সয়না বিরহ আমার, মধুর হোক আজ যামিনী ।"
সুন্দরী রামীণি আলুলায়িত চুলের লক্স ভিজে হাতে পুঁছে বললে,
যাই গো যাই ! কাপড় কেচে যেটুকুনি পাই, কোনোরকমে পেট চলে, তা কি তোমার জানা নাই ?
চন্ডীদাস বললেন, সে তো ভালো করেই জানি....
আমার মত অধম স্বামী, একটিও কাব্যমালা বেচতে পারিনা আমি ।
রামীণির ভিজে আঁচল । কাপড় কেচে কেচে পায়ে হাজা । কাপড়কাচার পাটার ওপর থেকে কাপড়কাচার ব্রাশ ,উজালার কৌটো, রিভাইভ, আলা ইনস্টোব্লিচ, ভ্যানিশ লিক্যুইড আর শীতপোষাকের জন্য ফেব্রিক ফেন্ডলি ইজি জেন্টল ওয়াশ। ডাঁইকরা সদ্য কাচা ভিজে কাপড় দেখিয়ে চন্ডীদাসকে বললে, একটু নিঙড়ে দাও বাপু, হাতের কবজিতে আর জোর পাইনে। চলো গিয়ে মেলে দি, ঐ জামাকাপড়, ধোবিঘাটের ঐ লাইনে ।
চন্ডীদাস আড়চোখে দ্যাখেন রামীর ঢলঢল কাঁচা যৌবন । নিজেকে মনে হয় বড় পুণ্যবাণ । আগের বৌ ত্যাগ দিয়েছে অভাবের জ্বালায় । বাশুলীদেবীর থানে রামীকে নিজের পত্নী বলে মেনেছেন । এখন রামী তাঁর ধ্যান, রামী তাঁর বাগদেবী । প্রতিটি রাতের অপেক্ষা । নতুন নতুন কামকলা। আর রামীর অণুপ্রেরণায় চন্ডীদাসের রোজ নতুন নতুন কবিতা লেখা.....
এদিকে কবিতার পান্ডুলিপি সংবাদপত্রের দফতরে জমা পড়ে গেছে অনেকদিন । কিন্তু দফতর থেকে কোনো উচ্চবাচ্য নেই । আর চন্ডীদাসের কাছে না আছে সেই পান্ডুলিপির প্রতিলিপি না আছে কোনো যোগাযোগের মাধ্যম । স্বয়ং উপস্থিত হয়ে জেনে আসতে মানে লাগে তাঁর । দফতরের ইমেল জানেনা, ফোন নম্বর জানেনা সে । অথচ সংবাদপত্র ত পাঠিয়েও দেননি সেই কাব্য সম্ভার । অতঃপর নিজেই গেলেন লাজলজ্জা সম্বরণ করে । তাঁরা জানালেন কাব্যের বিনিময়ে তো বহুদিন পূর্বেই তাঁকে ভূমি, জীবিকা এবং নানাবিধ উপহারে ভূষিত করেইছেন তিনি । কিন্তু চন্ডীদাস বললেন কিন্তু আমার পুঁথিটির কি হবে? তার স্বত্ত্ব কার থাকবে ? আর কেই বা সে পুঁথির প্রচার করবে ? মানুষ জানবেনা সেই অমূল্য পদ রচনার সুললিত কাব্যমালা ?
সংবাদপত্রের আধিকারিক বললেন "আপনার কাব্য সত্যি খুব সুন্দর, মন আর প্রাণ এককরে রচিত। অপূর্ব ছন্দমাধুরী পদের । কিন্তু কৃষ্ণ যে আপনার হাতে কলঙ্কিত, লম্পট এক ব্যক্তিত্ত্ব । মূল ইতিহাসকে যা বিকৃত করে, ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানে ।"
চন্ডীদাস আহত হয়ে বললেন তাঁর পদসম্ভার ফিরিয়ে দিতে ।
সংবাদপত্রের আধিকারিক বললেন "এত বড় আস্পর্ধা? ঐ পুঁথির কথা ভুলে গিয়ে নতুন পদ রচনা করুন।আমাদের কাছে গচ্ছিত থাক ওটি। আর যদি ভরসা না থাকে নিয়ে যান আপনার ঐ সব বস্তাপচা পদ সম্ভার! আরো রগরগে করে পদ লিখুন মশাই! পাবলিক খাবে তবে!"
অসহায় চন্ডীদাস ফিরে এলেন রিক্ত হাতে ।
...................................................... সেই সমাচার অব্যাহত । সেই ট্র্যাডিশান চলে আসছে যুগ যুগ ধরে ।
কালঃ বসন্ত
সময় কালঃ বর্তমান
চন্ডীদাস ডাক দিলেন "রামীণী, এই অবেলায়, হাওয়াবদলের সময় নদীর ঘাটে বসে কাপড় কাচলে যে ঠান্ডা লেগে যাবে তোমার । দিনের আলো নিবে এল যে....
" চলো প্রিয়তমা রামীণী, আর যে সয়না বিরহ আমার, মধুর হোক আজ যামিনী ।"
সুন্দরী রামীণি আলুলায়িত চুলের লক্স ভিজে হাতে পুঁছে বললে,
যাই গো যাই ! কাপড় কেচে যেটুকুনি পাই, কোনোরকমে পেট চলে, তা কি তোমার জানা নাই ?
চন্ডীদাস বললেন, সে তো ভালো করেই জানি....
আমার মত অধম স্বামী, একটিও কাব্যমালা বেচতে পারিনা আমি ।
রামীণির ভিজে আঁচল । কাপড় কেচে কেচে পায়ে হাজা । কাপড়কাচার পাটার ওপর থেকে কাপড়কাচার ব্রাশ ,উজালার কৌটো, রিভাইভ, আলা ইনস্টোব্লিচ, ভ্যানিশ লিক্যুইড আর শীতপোষাকের জন্য ফেব্রিক ফেন্ডলি ইজি জেন্টল ওয়াশ। ডাঁইকরা সদ্য কাচা ভিজে কাপড় দেখিয়ে চন্ডীদাসকে বললে, একটু নিঙড়ে দাও বাপু, হাতের কবজিতে আর জোর পাইনে। চলো গিয়ে মেলে দি, ঐ জামাকাপড়, ধোবিঘাটের ঐ লাইনে ।
চন্ডীদাস আড়চোখে দ্যাখেন রামীর ঢলঢল কাঁচা যৌবন । নিজেকে মনে হয় বড় পুণ্যবাণ । আগের বৌ ত্যাগ দিয়েছে অভাবের জ্বালায় । বাশুলীদেবীর থানে রামীকে নিজের পত্নী বলে মেনেছেন । এখন রামী তাঁর ধ্যান, রামী তাঁর বাগদেবী । প্রতিটি রাতের অপেক্ষা । নতুন নতুন কামকলা। আর রামীর অণুপ্রেরণায় চন্ডীদাসের রোজ নতুন নতুন কবিতা লেখা.....
এদিকে কবিতার পান্ডুলিপি সংবাদপত্রের দফতরে জমা পড়ে গেছে অনেকদিন । কিন্তু দফতর থেকে কোনো উচ্চবাচ্য নেই । আর চন্ডীদাসের কাছে না আছে সেই পান্ডুলিপির প্রতিলিপি না আছে কোনো যোগাযোগের মাধ্যম । স্বয়ং উপস্থিত হয়ে জেনে আসতে মানে লাগে তাঁর । দফতরের ইমেল জানেনা, ফোন নম্বর জানেনা সে । অথচ সংবাদপত্র ত পাঠিয়েও দেননি সেই কাব্য সম্ভার । অতঃপর নিজেই গেলেন লাজলজ্জা সম্বরণ করে । তাঁরা জানালেন কাব্যের বিনিময়ে তো বহুদিন পূর্বেই তাঁকে ভূমি, জীবিকা এবং নানাবিধ উপহারে ভূষিত করেইছেন তিনি । কিন্তু চন্ডীদাস বললেন কিন্তু আমার পুঁথিটির কি হবে? তার স্বত্ত্ব কার থাকবে ? আর কেই বা সে পুঁথির প্রচার করবে ? মানুষ জানবেনা সেই অমূল্য পদ রচনার সুললিত কাব্যমালা ?
সংবাদপত্রের আধিকারিক বললেন "আপনার কাব্য সত্যি খুব সুন্দর, মন আর প্রাণ এককরে রচিত। অপূর্ব ছন্দমাধুরী পদের । কিন্তু কৃষ্ণ যে আপনার হাতে কলঙ্কিত, লম্পট এক ব্যক্তিত্ত্ব । মূল ইতিহাসকে যা বিকৃত করে, ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানে ।"
চন্ডীদাস আহত হয়ে বললেন তাঁর পদসম্ভার ফিরিয়ে দিতে ।
সংবাদপত্রের আধিকারিক বললেন "এত বড় আস্পর্ধা? ঐ পুঁথির কথা ভুলে গিয়ে নতুন পদ রচনা করুন।আমাদের কাছে গচ্ছিত থাক ওটি। আর যদি ভরসা না থাকে নিয়ে যান আপনার ঐ সব বস্তাপচা পদ সম্ভার! আরো রগরগে করে পদ লিখুন মশাই! পাবলিক খাবে তবে!"
অসহায় চন্ডীদাস ফিরে এলেন রিক্ত হাতে ।
...................................................... সেই সমাচার অব্যাহত । সেই ট্র্যাডিশান চলে আসছে যুগ যুগ ধরে ।
No comments:
Post a Comment