এই ডিজিটাল নারদ কিছুদিন আগেই এসেছিলেন আমাদের রাজসভায়। নির্বাচনী প্রচার নিয়ে রাজমহলের অধিবাসীদের ব্যস্ততা তখন তুঙ্গে। মহাভারতের ইন্দ্রপ্রস্থ না হোক বিধানসভার সভাপর্বে নারদকে সেভাবে কেউ স্বাগত জানালনা। বিলাসব্যসনে তৃপ্ত আলোময় এইরাজ্যের মানুষেরা তাঁকে এতটুকুনি সমাদর করলনা? নারদ গেলেন ক্ষেপে। তিনি শুরু করলেন হুল ফোটাতে। ঠিক যেমন মহাভারতের যুগে যুধিষ্ঠিরের উদ্দেশ্যে তিনি ছুঁড়ে দিয়েছিলেন প্রশ্নবাণ তেমনি দিলেন । কেন জানি এইরাজ্যে পা দিয়েই তাঁর মনে হয়েছে এখানে এই এত আলো, এত আকাশ, নাজানি মানুষের সুখ এখানে উপছে পড়ছে। সারেসারে ত্রিফলা আলো ও মধ্যে মধ্যে নীল-সাদা জুঁইফুল আলোর আলোর রোশনাই দেখেই নারদের মনে পড়ে যায় রবীন্দ্রনাথকে। তিনি বলে ওঠেন
"হঠাত আলোর ঝলকানি দেখে ঝলমল করে চিত্ত্"
ট্যুইট এল "নারায়ণ, নারায়ণ"
নারদ বললেন, এখন আর বলিনা ঐ মন্ত্র। এখন শুধু নৈরাজ্য দেখলেই বলে উঠি, হুলায়ন, হুলায়ন। নিজের হাতের বীণার তারে বহুদিন বাদে টঙ্কার তুলে গাইতে শুরু করলেন
"এনেছি মোরা, এনেছি মোরা রাশিরাশি লুটের ভার "
রাজ্যের লোকেরা বলল, কি লুট, কেন লুট? কবে হল লুট?
কেউ বলল, আহা! লুট হতে যাবে কেন? বোঝোনা?
নারদ বলছেন যখন নিশ্চয়ই হরির লুঠ।
হরির লুঠই বটে।
হুলায়ন, হুলায়ন !
নারদ বললেন, তোমাদের রাজ্যে সকলে কুশল তো? সকলে খেয়েপরে বাঁচো তো? সকলের ঘরে শিশুরা শিক্ষা পাচ্ছে তো? স্বাস্থ্য পরিষেবা কেমন এখানে?
ডাইনে বাঁয়ে এত উড়ালপুল নির্মীয়মান এ রাজ্যে। অথচ দিনেদুপুরে সেই উড়ালপুল ভেঙেও পড়ে যায়। ভদ্রমহোদয়গণ, আমার প্রশ্ন পূর্ণিমার চাঁদ যে শহরের আলোর রোশনাই দেখে মুখ লুকায় তেমন আলোকনগরীতে কি এটা কাম্য?
কন্যাসন্তানদের শিক্ষার প্রসারে প্রত্যেক ছাত্রীর উচ্চশিক্ষায় এককালীন পঁচিশহাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে জেনে যারপরনেই প্রীত হয়েছি। কিন্তু অধিকাংশ কন্যাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে সেই টাকা এখনো পৌঁছায়নি জেনে আশ্চর্য হলাম। আর গাঁয়েগঞ্জে তো সেই টাকা দিয়ে কন্যার পিতা বিবাহের পণ দিচ্ছেন। এহেন পরিকল্পনার কি ভবিষ্যত?
সারা রাজ্য জুড়ে দেখি নতুন নতুন সাইকেলে ছাত্রছাত্রী মাঠঘাট চষে ফেলছে। অলিগলিতে সাইকেল চড়ে প্রেম করে বেড়াচ্ছে তারা। এতো দেখি শিক্ষার জন্য সাইকেল পেলাম টাকডুমাডুমডুম!
আর দুটাকা কিলো চালের কি হাল জানো তোমরা? চালের মধ্যে অর্ধেক কাঁকর, অর্ধেক চাল। সেই চাল ফোটাতে জ্বালানী ফুরায়। এতো দেখি ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রির জোগাড়।
এইসব দেখতে দেখতে কলিযুগ সত্যযুগ কিনা তা পরখ করবার উদ্দেশ্যে নারদ একবস্তা মোহর নিয়ে হাজির হলেন মর্ত্যে।এবার খবর রটে গেল, তিনি নাকি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আবির্ভূত হয়েচেন তাই সঙ্গে এত ধনসম্পত্তি তাঁর। কেউ ভাবল ধনপতি কুবেরের বাড়ি থেকে ফিরেছেন বলে এত ধনোপার্জন হয়েছে তাঁর।তাতে অবিশ্যি রাজমহলের কারোর হেলদোল হলনা। স্থান-কাল-পাত্র ভেদে অর্থের প্রতি মর্ত্যবাসীর লোভ সম্পর্কে দেবকুল অতীব সচেতন। অর্থ হল অর্থ। তা আবার যদি স্বেচ্ছায় কেউ দান করতে সম্মত হন তাতে দোষের কি? দেবর্ষি নারদ মোহরের থলি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডাকতে প্রস্তুত হতেই ঝাঁকেঝাঁকে মধুমক্ষীর মত রাজ-অমাত্যগণেরা হাজির হলেন সেখানে। নারদ ভাবলেন...অর্থ অতি বিষম বস্তু! এইবেলা দ্যাখো, রাজকার্য ফেলে সকলে ঐ থলির মোহরের মোহে ছুটে এসেছেন। এদ্দিন আমার কোনো খোঁজ কেউ রাখেনি। এঁরা কেউ একটা ই-মেইলের সৌজন্যমূলক উত্তর দেওয়া তো দূরের কথা আমার ওয়েবপেজে নিদেন একটা মন্তব্য, কিম্বা ভালোলাগার কথাও জানাননি। আর আজ দ্যাখো টাকার কথায় সকলেই আমাকে চাইছে।রাজামশাই অবিশ্যি মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। কারণ তিনি আটঘাঁট বুঝে চলেন। সাদা কাপড়ে কাদা লেগে যাওয়ার চান্স শতকরা ১০০ ভাগ। চ্যালাচামুন্ডারা পেলে তিনি পাবেননা তা হয়না। মনে মনে ভয়ও যে ছিলনা তা নয়। কারণ আসন্ন নির্বাচনে কালি লেগে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে গেলেও বিপদ আবার নির্বাচনী প্রচারে প্রচুর অর্থেরো প্রয়োজন। অগত্যা নারদই সহায়। নারদই গৌরীসেন। "তোমরা আমাদের মোহর দাও, আমরা তোমার কাজে লাগব" এই নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে সব দুঁধে রাজমন্ত্রীরা নারদের মোহরের থলি থেকে একে একে প্রচুর মোহর পেলেন।
"হঠাত আলোর ঝলকানি দেখে ঝলমল করে চিত্ত্"
ট্যুইট এল "নারায়ণ, নারায়ণ"
নারদ বললেন, এখন আর বলিনা ঐ মন্ত্র। এখন শুধু নৈরাজ্য দেখলেই বলে উঠি, হুলায়ন, হুলায়ন। নিজের হাতের বীণার তারে বহুদিন বাদে টঙ্কার তুলে গাইতে শুরু করলেন
"এনেছি মোরা, এনেছি মোরা রাশিরাশি লুটের ভার "
রাজ্যের লোকেরা বলল, কি লুট, কেন লুট? কবে হল লুট?
কেউ বলল, আহা! লুট হতে যাবে কেন? বোঝোনা?
নারদ বলছেন যখন নিশ্চয়ই হরির লুঠ।
হরির লুঠই বটে।
হুলায়ন, হুলায়ন !
নারদ বললেন, তোমাদের রাজ্যে সকলে কুশল তো? সকলে খেয়েপরে বাঁচো তো? সকলের ঘরে শিশুরা শিক্ষা পাচ্ছে তো? স্বাস্থ্য পরিষেবা কেমন এখানে?
ডাইনে বাঁয়ে এত উড়ালপুল নির্মীয়মান এ রাজ্যে। অথচ দিনেদুপুরে সেই উড়ালপুল ভেঙেও পড়ে যায়। ভদ্রমহোদয়গণ, আমার প্রশ্ন পূর্ণিমার চাঁদ যে শহরের আলোর রোশনাই দেখে মুখ লুকায় তেমন আলোকনগরীতে কি এটা কাম্য?
কন্যাসন্তানদের শিক্ষার প্রসারে প্রত্যেক ছাত্রীর উচ্চশিক্ষায় এককালীন পঁচিশহাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে জেনে যারপরনেই প্রীত হয়েছি। কিন্তু অধিকাংশ কন্যাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে সেই টাকা এখনো পৌঁছায়নি জেনে আশ্চর্য হলাম। আর গাঁয়েগঞ্জে তো সেই টাকা দিয়ে কন্যার পিতা বিবাহের পণ দিচ্ছেন। এহেন পরিকল্পনার কি ভবিষ্যত?
সারা রাজ্য জুড়ে দেখি নতুন নতুন সাইকেলে ছাত্রছাত্রী মাঠঘাট চষে ফেলছে। অলিগলিতে সাইকেল চড়ে প্রেম করে বেড়াচ্ছে তারা। এতো দেখি শিক্ষার জন্য সাইকেল পেলাম টাকডুমাডুমডুম!
আর দুটাকা কিলো চালের কি হাল জানো তোমরা? চালের মধ্যে অর্ধেক কাঁকর, অর্ধেক চাল। সেই চাল ফোটাতে জ্বালানী ফুরায়। এতো দেখি ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রির জোগাড়।
এইসব দেখতে দেখতে কলিযুগ সত্যযুগ কিনা তা পরখ করবার উদ্দেশ্যে নারদ একবস্তা মোহর নিয়ে হাজির হলেন মর্ত্যে।এবার খবর রটে গেল, তিনি নাকি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আবির্ভূত হয়েচেন তাই সঙ্গে এত ধনসম্পত্তি তাঁর। কেউ ভাবল ধনপতি কুবেরের বাড়ি থেকে ফিরেছেন বলে এত ধনোপার্জন হয়েছে তাঁর।তাতে অবিশ্যি রাজমহলের কারোর হেলদোল হলনা। স্থান-কাল-পাত্র ভেদে অর্থের প্রতি মর্ত্যবাসীর লোভ সম্পর্কে দেবকুল অতীব সচেতন। অর্থ হল অর্থ। তা আবার যদি স্বেচ্ছায় কেউ দান করতে সম্মত হন তাতে দোষের কি? দেবর্ষি নারদ মোহরের থলি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডাকতে প্রস্তুত হতেই ঝাঁকেঝাঁকে মধুমক্ষীর মত রাজ-অমাত্যগণেরা হাজির হলেন সেখানে। নারদ ভাবলেন...অর্থ অতি বিষম বস্তু! এইবেলা দ্যাখো, রাজকার্য ফেলে সকলে ঐ থলির মোহরের মোহে ছুটে এসেছেন। এদ্দিন আমার কোনো খোঁজ কেউ রাখেনি। এঁরা কেউ একটা ই-মেইলের সৌজন্যমূলক উত্তর দেওয়া তো দূরের কথা আমার ওয়েবপেজে নিদেন একটা মন্তব্য, কিম্বা ভালোলাগার কথাও জানাননি। আর আজ দ্যাখো টাকার কথায় সকলেই আমাকে চাইছে।রাজামশাই অবিশ্যি মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। কারণ তিনি আটঘাঁট বুঝে চলেন। সাদা কাপড়ে কাদা লেগে যাওয়ার চান্স শতকরা ১০০ ভাগ। চ্যালাচামুন্ডারা পেলে তিনি পাবেননা তা হয়না। মনে মনে ভয়ও যে ছিলনা তা নয়। কারণ আসন্ন নির্বাচনে কালি লেগে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে গেলেও বিপদ আবার নির্বাচনী প্রচারে প্রচুর অর্থেরো প্রয়োজন। অগত্যা নারদই সহায়। নারদই গৌরীসেন। "তোমরা আমাদের মোহর দাও, আমরা তোমার কাজে লাগব" এই নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে সব দুঁধে রাজমন্ত্রীরা নারদের মোহরের থলি থেকে একে একে প্রচুর মোহর পেলেন।